
বিশেষ প্রতিনিধি: ফেনীতে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর শিশুর মরদেহ স্কুল ব্যাগে পাথর ঢুকিয়ে ডোবায় ডুবিয়ে দেয়া হয় ফেনীতে নিখোঁজের ৪ দিন পর পুলিশ আহনাফ আল মাঈন নাশিত নামের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা জানায় মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে শিশুটিকে হত্যা করেছে।
হত্যাকারীদের দেয়া তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে ফেনী শহরের দেওয়ানগঞ্জ ময়লার ডিপু এলাকায় ঢাকা-চট্রগ্রাম রেললাইনের পাশে একটি ডোবা থেকে নিহত নাসিতের মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছেন, আশ্রাফ হোসেন তুষার (২০), মোবারক হোসেন ওয়াসিম (২০) ও ওমর ফারুক রিফাত (১৯)। তারা সবাই ফেনী শহরের আতিকুল আলম সড়কের বিভিন্ন বাসাবাড়িতে ভাড়া থাকতেন।
বৃহস্পতিবার বিকালে ফেনীর পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান তাঁর কার্যালয়ে এ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন।
তিনি বলেন, গত রোববার (৮ ডিসেম্বর) বিকালে ফেনী শহরের আতিকুল আলম সড়কের লাইটিং হাউজিং কোচিং সেন্টারে পড়তে যায় ওই এলাকার অস্থায়ী বাসিন্দা রেডক্রিসেন্ট কর্মকর্তা মাঈন উদ্দিন সোহাগের ছেলে নাশিত। কোচিং শেষে ঘরে না ফেরায় ৯ তারিখে নাশিতের পিতা সোহাগ ফেনী মডেল থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। গত দুই দিন ধরে একটি মোবাইল থেকে নাশিতের পিতা সোহাগকে ওয়াটসেপে নাশিতের ছবি ও ভিডিও ক্লিপ পাঠিয়ে ১২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করা হয়। বুধবার তুষার নামের এক ব্যক্তির কথাবার্তায় নাশিতের পিতার সন্দেহ হলে তিনি পুলিশকে অবহিত করেন। একই দিন পুলিশ তুষারকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে রাত ২ টার দিকে তুষার অপহরণের বিষয়টি স্বীকার করে। পুলিশকে তুষারের দেয়া তথ্যমতে ঘটনায় জড়িত ওয়াসিম ও রিফাতকে শহরের বিসিক এলাকা থেকে আটক করে। তাদের স্বীকারোক্তি মতে তুষার পূর্ব পরিচিত হওয়ায় নাশিতকে কৌশলে ওয়াসিম ও রিফাতসহ ফেনী শহরের দেওয়ানগঞ্জ এলাকায় রেল লাইনে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে জুসের সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে। পরে নাশিতের জ্ঞান ফিরলে সে বাসায় যাওয়ার জন্য কান্নাকাটি করতে থাকে। এসময় তিনজন নাশিতকে পাশের ঝাউবনে নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। একপর্যায় তারা নাশিতের সাথে থাকা স্কুল ব্যাগে পাথর ঢুকিয়ে তাকে পাশে একটি ডোবায় ডুবিয়ে দেয়।পরদিন নাশিতের মরদেহ ডুবে আছে কি না তা দেখতে তিন জন ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। তারা মরদেহটি অন্যত্র স্থানান্তরের পরিকল্পনা করে পরে সফল হতে পারেনি।
এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড তুষার সন্দেহ না করতে নিহত নাশিতের বাবা সোহাগের ছেলে নিখোঁজের পোস্ট শেয়ার করে লিখেছিল ‘ আল্লাহ আপনার রহমতের উসিলায় আমাদের ছোট ভাইটাকে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দেন। ‘
নিহত নাশিতের বাবা মাঈন উদ্দিন সোহাগ বলেন, আমার ফুলের মত নিষ্পাপ ছেলের হত্যাকারীদের সর্বচ্চো শাস্তি চাই।
নিহত নাশিত ফেনীর আতিকুল আলম সড়কের ফেনী গ্রামার স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিল। সে সোহাগের দুই ছেলের মধ্যে ছোট ছিল।