নিজস্ব প্রতিবেদক: আবার নতুনরুপে আলো জ্বললো ফেনী শহরের পুরাতন জেলা কারাগারে। ফেনী জেলা কারাগার-২ নামে শনিবার (১ নভেম্বর) ফের কার্যক্রম শুরু এ কারাগারে। এখানে বিচারাধীন মামলার আসামিদের রাখা হবে।
ফেনী কারাগার-২ এর জেল সুপার মো. দিদারুল আলম জানান, ‘চট্টগ্রাম বিভাগের ৮টি জেলা কারাগার থেকে বিশেষ বন্দীদের ফেনী কারাগার-২ এ স্থানান্তর করা হবে।
ইতিমধ্যে ফেনী কারাগার থেকে দুপুরে ২১ জন আসামীকে স্থানান্তর করা হয়। জেল সুপার আরো জানান, ‘কারাগারকে অপরাধীদের জন্য সংশোধনাগার হিসেবে বাস্তবে রূপ দিতে চায় রাষ্ট্র। তারই অংশ হিসেবে দেশের চার জেলায় (ফেনী, পিরোজপুর, মাদারীপুর ও কিশোরগঞ্জ) চারটি পৃথক কারাগার প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে৷
এর অংশ হিসেবে ফেনীতে দ্বিতীয় কারাগারের যাত্রা শুরু হচ্ছে। অন্য তিনটির কাজ এখনও শেষ না হওয়ায় সেগুলো এখনই চালু হচ্ছে না।’
‘পর্যায়ক্রমে চট্টগ্রাম বিভাগের ১২ জেলার কারাগারে মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বন্দীদের ফেনী কারাগার-২ এ স্থানান্তর করা হবে।’
‘প্রাথমিকভাবে ৮ জেলার কারাগার থেকে ফেনীতে বন্দি স্থানান্তরকালে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সহযোগিতা করছেন’ বলে জানান ফেনী কারাগার-২ এর জেল সুপার।
তার মতে, ‘দ্বিতীয় কারাগার চালু হওয়ার মধ্য দিয়ে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে। এতে করে মানবেতর জীবনযাপন থেকে রেহাই পাবে বন্দীরা। এছাড়া বিভিন্ন অপরাধের আসামীদের মধ্যে মেলবন্ধনের সুযোগ হ্রাস পাবে। এতে করে অপরাধ প্রবণতা কমে মুক্তি পাওয়া বন্দীরা কর্মসংস্থানের পথ খুঁজে পাবেন।’
প্রসঙ্গত; ১৯১৫ সালে শহরের মাস্টার পাড়ায় দেড় একর জায়গার ওপর প্রথমে উপ-কারাগার (সাব-জেল) হিসেবে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন বন্দীধারণ ক্ষমতা ছিল ১৭০ জন পুরুষ ও ২ জন নারী মিলে মোট ১৭২ জন। ১৯৯৮ সালে উপ-কারাগার থেকে এটি জেলা কারাগারে উন্নীত হয়।
১৯৯৬ সালে শহরতলীর কাজিরবাগ মৌজায় সাড়ে ৭ একর জায়গায় ৩৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন জেলা কারাগারের জন্য ২৮টি ভবন নির্মাণ শুরু হয়। আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত এ কারাগারে ২টি ওয়াচ টাওয়ার, সিসি ক্যামেরা, ২.৫০ কেভি.এ বিদ্যুৎ সাব-স্টেশন, ১০ কিলোওয়াট সৌর বিদ্যুৎ, ২০ কেভি জেনারেটর ছাড়াও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা, অভ্যর্থনা মঞ্চ, প্যারেড গ্রাউন্ড, আন্ডারগ্রাউন্ড ওয়াটার রিজার্ভার রয়েছে। এ কারাগারে বন্দি ধারণক্ষমতা রয়েছে ৩৫০ জন।
২০১৯ সালের ১২ জানুয়ারি শত বছর পর ফেনী জেলা কারাগার নতুন ঠিকানায় স্থানান্তরিত হয়। সেদিনই ৮ শতাধিক বন্দীকে পুরাতন কারাগার থেকে শহরতলীর রানীরহাটে নবনির্মিত জেলা কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।


